নাগরিক

আলো ফুটতে কাক ডাকতে ব্যস্ত জীবন জাগে।
দিনভোর ঘাম রক্ত ঝরিয়ে রুজির খোঁজে লাগে।
কাজলা নদীর দখিন পারে ছোট্ট মাটির ঘর।
দালান জুড়ে বড়ি আচার, চালের পরে খড়।
দিনের আলো ফিকে হয়ে এল, পথচলা ঘরমুখী।
আলো নিভতেই ঝিঁঝির ডাক, জোনাকির ঝিকিমিকি।
কাঠ কয়লার উনুন জ্বলে, তেলের পরে মাছ,
পেঁয়াজ রসুন আদা লঙ্কায় কালোয়াতি মেজাজ।
ভালবাসা মেখে আধপেটা খেয়ে ঘুম যায় চরাচর।
একঘেয়ে ওই রোজনামচা কত না মলিন, ধূসর!
ঝাঁ চকচকে জীবন মানেই স্বপ্নেরা ঝিলমিল।
বাড়ি, গাড়ি আর দামী পসরায় আনন্দ অনাবিল।
আকাশ ছোঁয়া বহুতলের এক টুকরো আকাশ।
ত্রিসীমানায় ঠাহর হয় না পায়ের তলার ঘাস।
দড়ির ওপর হেঁটে চলা এই ঝলমলে জীবন।
সফলতা আর সচ্ছলতার দামে কেনা দূষণ।
একটু হিসেবে গরমিল হলেই সব হারিয়ে একা
অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া খুঁজতে আলোর রেখা।
জীবনযুদ্ধে ভীড়ের মধ্যে ভারাক্রান্ত এক মন,
বন্দী সে বোঝে, অহরহ খোঁজে নিস্তরঙ্গ জীবন।
এগিয়ে চলার তোড়ে নিত্য ভাঙে গড়ে কত ছবি।
ফেরার পথ নাই, হৃদয়ে বাজে তাই বিষাদ ভৈরবী।

Leave a comment